NAME
Ram thakur
Ram thakur

শ্রীশ্রীকৈবল্যধাম, যাদবপুর, কলকাতা, ভারতবর্ষ

Image

১৯৪০ সাল। ঠাকুর তখন কলকাতার এক ভক্তের বাড়িতে। একদিন কতিপয় ভক্তের সঙ্গে কথোপকথনের মধ্যে ঠাকুর ডাক্তার ক্ষিতিভুষণ সেন মহাশয়কে কথা প্রসঙ্গে বলেন যে তাঁর থাকার কোন জায়গা নেই। বিস্মিত ডাক্তার সেন বলেন - যাদবপুরে তাঁর একটা জমি আছে; ঠাকুর চাইলে তিনি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঠাকুরের জন্য সেই জমিতে একটা বাড়ি তৈরি করে দেবেন।

প্রস্তাবে সস্মত হয়ে ঠাকুর জমিটি দেখতে যান ডাক্তার সেনের সঙ্গে। এখন যেখানে পবিত্র তুলসী মঞ্চটি রয়েছে, সেদিন ঠিক সেখানেই ঠাকুর দাঁড়িয়েছিলেন। জায়গাটি ঠাকুরের পছন্দ হয়েছিল। তিনি বলেন যে, এখানে ছোট একটা দোতলা বাড়ি হবে। দোতলায় থাকবে একটা শোওয়ার ঘর আর বারান্দা; একতলায় আর একটা ঘর। ঠাকুর আরও বলেছিলেন যে বাড়ির সিঁড়ি হবে অত্যন্ত সরু যাতে একই সময়ে একজন করে শুধু উঠতে বা নামতে পারবে, একসঙ্গে দুজন নয়। ঠাকুর দোতলায় থাকবেন এবং কাউকে ডাকার প্রয়োজন হলে ঘন্টা বাজিয়ে ডাকবেন।

সেদিন যেখানে দাঁড়িয়ে ঠাকুর তাঁর এই ইচ্ছার কথা বলেছিলেন, তাঁর নির্দেশ ছিল সেই জায়গাটিতে যেন সত্যনারায়ণপীঠ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি আরও বলেছিলেন যে, বাড়ির নকশাটা তৈরি করে তাঁকে যেন একবার দেখানো হয়। নকশা তৈরি হলে ঠাকুর সেটি অনুমোদন করেন এবং ১৯৪২ সালেই বাড়ির নির্মান কাজ শেষ হয়। ডাক্তার ক্ষিতিভুষণ সেন মহাশয় ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করেন এবং ঠাকুর মহানন্দে জানিয়ে দেন যে, গৃহপ্রবেশ তারিখটা হবে ১৩৪৯ বঙ্গাব্দ ১৩ই ফাল্গুন (১৯৪২-এর ২৬শে ফেব্রুয়ারি)। ঠাকুরের গৃহপ্রবেশের খবর ভক্তদের জানানো হয় এবং অনুষ্ঠানটিকে সর্বাঙ্গসুন্দর করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়। Image

১৩৪৯ বঙ্গাব্দের ১৩ই ফাল্গুন-গৃহপ্রবেশের নির্ধারিত দিন। ঐ সময়ও দিনে ঠাকুর ছিলেন তাঁর অন্যতম ভক্ত কুঞ্জলাল মজুমদার মহাশয়ের কলকাতার ১১ নং আর্ল স্ট্রিটের বাড়িতে। শিষ্যেরা বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ঠাকুর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি; এমনকি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা একজনের সঙ্গেও দেখা করেননি। তবে অনুগ্রহ করে তিনি অনুষ্ঠানে তাঁর পাদুকা নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। শ্রীশ্রীকৈবল্যধামের দ্বিতীয় মোহান্ত শ্রীমৎ শ্যামাচরণ চট্রোপাধ্যয় পবিত্র পাদুকাযুগল স্থাপন করে পুজো করেছিলেন। ঠাকুর এটাও ঘোষণা করেছিলেন যে, যাদবপুরের মন্দিরটি হবে আর একটি শ্রীশ্রীকৈবল্যধাম এবং সেটি হবে বাংলাদেশে চট্টগ্রাম পাহাড়তলির শ্রীশ্রীকৈবল্যধামের একটি শাখা।

যাদবপুরের বাড়িতে সে-সময় প্রথমে অফিসঘর ও মহাপ্রসাদ তৈরি করার রান্নাঘরটি ছিল একতলায়। মন্দিরের সামনে গড়ে তোলা হয় একটা তুলসীমঞ্চ আর প্রতিদিন সেখানে ভক্তবৃন্দের কীর্তন সহ সত্যনারায়ণের পুজো অনুষ্ঠিত হয়।

Image

পরবর্তীকালে, মন্দির ও তুলসীমঞ্চের বিশেষ সংস্কার সাধন করা হয়। নির্মাণ করা হয় দৃষ্টিশোভন একটি নতুন মন্দির। বর্তমানে সেখানে প্রতিদিন শ্রীশ্রীসত্যনারায়ণের চিত্রপটের অর্চনা করা হয়। সেই প্রাঙ্গণেই নির্মাণ করা হয় স্বতন্ত্র একটা তিনতলা বাড়ি যার মধ্যে তৈরি হয় অফিসঘর, দাতব্য চিকিৎসালয়, রান্নাঘর, মহাপ্রসাদ বিতরণের ঘর, মোহান্ত নিবাস, গ্রন্থগার, অনুগামী ভক্তদের নামদানের ঘর প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন কর্মকান্ডের জন্য প্রয়োজনীয় ভিন্ন ভিন্ন ঘর। ঠাকুরের জীবনী ও বাণী নিয়ে রচিত ও শ্রীশ্রীকৈবল্যধাম থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ ও ঠাকুরের বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য একটি বিভাগও খোলা হয় এই বাড়ির একতলায়। স্থান সংকুলানের জন্য দাতব্য চিকিৎসালয়, অতিথিশালা সহ অন্যান্য কল্যাণমূলক কাজ এগিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে। শ্রীশ্রীঠাকুরের অপার করুণা সম্বল করে শ্রীধামের পশ্চিমদিকস্থ জমিতে নির্মাণকার্য হাতে নেওয়া। এই বিষয়ে আপামর জনসাধারণ ও ভক্তদের সহানুভূতি, সহযোগিতা ও শুভেচ্ছা আশাকরি। আগামীদিনে এই সম্প্রসারিত গৃহে কল্যাণমূলক ও দাতব্য কার্য্যাবলীসহ বিভিন্ন উন্নয়নমুখী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রূপায়ণে সহায়ক হবে।

Best viewed in Firefox / Google Chrome / IE 9.0 or higher
© Shri Shri Kaibalyadham Jadavpur, West Bengal India, 2013.
Website Design By: DRS Tech